
অনলাইন ডেস্ক ৩ এপ্রিল ২০২৪ , ১:৫৯:০৮
মেট্রোরেলের ছয়টি রুট ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মাণ করে ঢাকা শহরকে যানজটমুক্ত করার লক্ষ্য রয়েছে সরকারের। এ পরিকল্পনায় মেট্রোরেলের লাইন-২ তে পুরান ঢাকাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের পরিচালক মো. আব্দুল বাকী মিয়া।

মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) ডিসিসিআই অডিটোরিয়ামে ‘পুরান ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্যে যানজটের প্রভাব ও উত্তরণের উপায় চিহ্নিতকরণ’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন তিনি।
আব্দুল বাকী মিয়া বলেন, এলিভেটেড ও আন্ডারগ্রাউন্ড সমন্বয়ে এমআরটি লাইন-২ নির্মাণ করতে খরচ হবে প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা। এ প্রকল্প নির্মাণে অর্থ সংস্থানের জন্য উন্নয়ন সহযোগী খোঁজা হচ্ছে।
এছাড়া মেট্রোরেলের ছয়টি রুট ২০৩০ সালের মধ্যে নির্মাণ করে ঢাকা শহরকে যানজটমুক্ত করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, সরকারি এ পরিকল্পনায় মেট্রোরেলের লাইন-২ তে পুরান ঢাকাকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে।
এমআরটি লাইন-২ রুট প্ল্যানটি হলো- গাবতলী-ঢাকা উদ্যান-মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ড-ঝিগাতলা-সায়েন্স ল্যাবরেটরি- নিউমার্কেট-আজিমপুর-পলাশী-ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ- গুলিস্তান-মতিঝিল-কমলাপুর স্টেশন-মান্ডা- দক্ষিণগাঁও- ধামড়িপাড়া-সাইনবোর্ড- ভুইঘর-জালকুড়ি-নারায়ণগঞ্জ। এ রুটের সঙ্গে ব্রাঞ্চ লাইন (সংযুক্ত রুট) হিসেবে গোলাপশাহ মাজার-নয়াবাজার-সদরঘাট। এ প্রকল্পের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ৩৫ কিলোমিটার।
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) সাবেক পরিচালক এস এম সালেহ উদ্দিন বলেন, মেট্রো সিস্টেম এমন হওয়া উচিত ছিল যেখানে একটা লাইন থেকে অন্য লাইনে হেঁটেই চলে যাওয়া যাবে। একইসঙ্গে সার্কুলার মেট্রোরেল হলে সবাই উপকৃত হবে।
তবে মেট্রোরেল তৈরির পরিকল্পনায় ঘাটতি রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মেট্রোরেলের লাইন-৬ নির্মাণের সময় আরও দুটি লাইন তৈরির কথা ছিল এসটিপিতে। কিন্তু আরএসটিপি যখন করা হয় এ লাইন বাদ দিয়ে লিনিয়ার লাইনের দিকে চলে গেছে। ডেভেলপমেন্ট ওরিয়েন্টেড ট্রানজিট করা হচ্ছে। কিন্তু আমাদের হওয়া উচিত ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট।
সালেহ উদ্দিন বলেন, এমআরটি-২ প্রকল্পে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৬০ হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৪৫ হাজার ৬২৬ কোটি টাকা ধরা হয়েছে বৈদেশিক ঋণ হিসাবে। বাকি ১৫ হাজার ২১০ কোটি খরচ হবে সরকারি খাত থেকে। তবে ভূমি অধিগ্রহণ, টিওডিসহ স্টেশন প্লাজার খরচ এখানে ধরা হয়নি।
এমআরটি লাইন ২-এর ডিপো ও ডিপো এক্সেস করিডর এবং কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড নির্মাণে ডেমরার মাতুয়াইল ও দামড়িপাড়া মৌজায় গ্রিন মডেল টাউন এবং আশুলিয়া মডেল টাউনের মধ্যবর্তী স্থানে মোট ৬৫ হেক্টর জমি রাজউকের ড্যাপে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) সভাপতি আশরাফ আহমেদ বলেন, ঢাকার যানজটের কারণে দেশের সামগ্রিক জিডিপি প্রায় ২ দশমিক ৯ শতাংশ কম হচ্ছে। প্রতিদিন ট্রাফিক জ্যামের কারণে নষ্ট হয়ে যাওয়া কর্মঘণ্টার আর্থিক মূল্য প্রায় ১৪০ কোটি টাকা। সড়কের খোঁড়াখুঁড়ি, অবৈধ ফুটপাত দখল, অপরিকল্পিত গাড়ি পার্কিং, অপ্রতুল সড়ক অবকাঠামো ও অকার্যকর ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার কারণে বিশেষ করে পুরোনো ঢাকায় সৃষ্ট সহনীয় যানজট পরিস্থিতি ব্যবসা পরিচালন ব্যয় বৃদ্ধি পেয়েছে।
এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে স্মার্ট ট্রাফিক সিস্টেম চালু করা, নদীপথের ব্যবহার বাড়ানো এবং পুরান ঢাকার প্রধান সরু ও ব্যস্ত সড়কে একমুখী ট্রাফিক ব্যবস্থা চালু করার দাবি জানিয়েছেন ডিসিসিআই সভাপতি।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস, ডিএসসিসির সিইও মো. মিজানুর রহমান, বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল হাসেম, বাংলাদেশ ইলেকট্রিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলীমুজ্জামান আলম প্রমুখ।




































































































































































































































































































































































































































































































































































































































































































































































































































































































































































